Post Image

একজন আদর্শ চালক হতে হলে কি কি গুণাবলী থাকা উচিত

একজন আদর্শ চালক হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় গুণাবলী নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। নিরাপদ ও দক্ষ ড্রাইভিংয়ের জন্য চালকের মধ্যে থাকতে হবে শিক্ষাগত যোগ্যতা, ট্রাফিক আইন মেনে চলা, দায়িত্ববোধ, যান্ত্রিক জ্ঞান, আত্মবিশ্বাস এবং ধৈর্য্য। এসব গুণ একজন চালককে শুধু দক্ষই নয়, বরং যাত্রী ও সড়কের জন্য নিরাপদ করে তোলে।


ড্রাইভিং একটি সেবামূলক পেশা। একজন দক্ষ বা আদর্শ চালক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। কেননা যানবাহনে যেসব যাত্রীরা আরোহন করে তাদের নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া একজন চালকের দায়িত্ব। একজন আদর্শ চালকের যে সকল গুণাবলী থাকা উচিত তা হলো:

১. শিক্ষাগত যোগ্যতা:

একজন চালক হওয়ার জন্য নূন্যতম অষ্টম শ্রেণী পাশ হতে হবে। তাছাড়া বাংলা ও ইংরেজী সাবলীলভাবে লিখতে ও পড়তে পারতে হবে। বাস্তবে দেখা যায় যেসব চালকের শিক্ষাগত যোগ্যতা ভাল তাদের ড্রাইভিং দক্ষতা খুব ভাল। শিক্ষাগত যোগ্যতা গাড়ি চালনা পেশার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

২. আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল / ট্রাফিক নিয়ম মেনে চলা:

অনেকেই মনে করা হয় একজন ড্রাইভার দ্রুত গতিতে গাড়ি চালাতে পারলেই ভাল ড্রাইভার, কিন্তু এ ধারনাটি সম্পূর্ণ ভুল। যদি না চালক সড়ক ব্যবহারবিধি/ ট্রাফিক আইন না জানেন এবং আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না হন তাহলে তাকে আদর্শ ড্রাইভার বলা যাবে না। একজন আদর্শ ড্রাইভার হিসেবে অবশ্যই সড়কের বিভিন্ন ব্যবহারবিধি/ট্রাফিক নিয়ম কানুন ভালভাবে জানতে হবে।

৩. দায়িত্ববোধ: 

চালক যখন গাড়ি চালাবেন তখন নিজের, গাড়িতে আরোহনকারী যাত্রী ও পথচারীদের নিরাপত্তা সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে। কারণ চালকের সামান্যতম ভুলের কারণে নিজের, যাত্রী এবং পথযাত্রীদের বিরাট ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। কাজেই চালক যদি দায়িত্বের সাথে সঠিকভাবে মনোযোগী হন তাহলে তার পক্ষে ট্রাফিক পরিস্থিতি মোকাবেলা করে সুন্দর ও স্বাবলীল ভাবে গাড়ি চালানো সম্ভব হবে।

৪. যান্ত্রিক জ্ঞান:

একজন চালক হিসেবে অবশ্যই ইঞ্জিন সম্পর্কে মৌলিক ধারনা থাকতে হবে। নতুবা ভালো চালক হওয়া সম্ভব নয়। যেমন: ইঞ্জিনের ফুয়েল সিষ্টেম, লুব্রিকেটিং সিষ্টেম, ব্রেক সিষ্টেম এর সাথে সম্পর্কযুক্ত পার্টসগুলি সম্পর্কে ধারনা থাকতে হবে। তাছাড়া ডিজেল ইঞ্জিনের এয়ার লক, পেট্রোল ইঞ্জিনের ভেপার লক সমস্যা এবং এগুলোকে কিভাবে প্রতিকার করা যায় তা জানা থাকতে হবে। ইহা ছাড়াও ইঞ্জিনের ছোট খাটো ত্রুটি সম্পর্কে ভালো ধারনা থাকা দরকার।

৫. আত্মত্মবিশ্বাস: 

অভিজ্ঞতার সাথে সাথে যেমন আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পায়, তেমনি অধিক আত্মবিশ্বাস আবার দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। অনেক সময় নতুন চালকগণ ট্রাফিক স্রোতের ভীড়ে আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেন এবং দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কাজেই আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে, কিন্তু অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস এবং দুর্বল আত্মবিশ্বাস দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে।

৬. ধৈর্য্য:

কথায় আছে 'ধৈর্য্য' একটি মহৎ গুণ। যেমন: আপনি সামনের গাড়ির চালকের কাছে সাইড চাইলেন। কিন্তু সে আপনাকে সাইড দিলেন না বরং আরো আপনাকে বাধার সৃষ্টি করলেন। তাই বলে আপনি ধৈর্য্য হারিয়ে তার প্রতিশোধ নিতে পারবেন না। এটি দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। আর একজন আদর্শ চালক কোন ভাবেই প্রতিযোগীতামূলক মানসিকতা নিয়ে গাড়ি চালায় না। মনে রাখবেন যাদের ধৈর্য্য বেশী তারা জীবনে বেশী উন্নতি করতে পারে। অতএব, আপনি ধৈর্য্য সহকারে গাড়ি চালান তা হলেই আপনি একজন আদর্শ চালক হবেন।

WhatsApp Chat